অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট তৈরি এবং ডাউনলোড করুন | tin certificate

tin certificate: অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট কি করা প্রয়োজন? তাহলে আমাদের পোষ্ট পড়লেই আপনি নিজের জন্য একটি টিন(TIN) সার্টিফিকেট করে নিতে পারবেন। আপনি যদি চাকুরীজিবী বা ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন এবং আপনার করযোগ্য আয় থাকলে আপনার টিন সার্টিফিকেট করা আবশ্যক। সরকারি সব সেবা ডিজিটাল করার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার, তারই অংশ হিসেবে পুরনো টিন সার্টিফিকেট (Tin Certificate) কে আধুনিক করে অনলাইন ই-টিন সার্টিফিকেটে রূপান্তর করা হয়েছে। যেসব কাজে টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন নিম্নে দেওয়া হলঃ

  • ক্রেডিট কার্ড
  • ব্যবস্যা
  • গাড়ি কিনতে/ গাড়ির মালিক হতে
  • নির্বাচনে প্রার্থী হতে
  • ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে
  • সঞ্চয় পত্রের জন্য
  • সিটি কর্পোরেশন এর ভিতর কোন জমি/ভবন রেজিষ্ট্রেশন এর জন্য
  • ব্যবসায়িক সমিতি বা কোনো নিবন্ধিত সংগঠনের সদস্য হতে ইত্যাদি।

উপরোল্লিখিতকোন কাজে আপনার প্রয়োজন হলে আপনার জন্য টিন সার্টিফিকিটে করতে পারেন। এছাড়া যাদের কর যোগ্য আয় আছে তাদের জন্য TIN করা প্রযোজ্য। TIN এর পূর্ণরূপ taxpayer identification number মানে করদাতা শনাক্তকরন সংখ্যা। এছাড়া এটি সকল দেশেই প্রচলিত আছে তেমনি আমাদের দেশেও প্রচলিত ব্যক্তির ইনকামের কিছু অংশ সরকার প্রদান করতে হয় যাকে ইনকাম ট্যাক্স বলা হয়।

কেন টিন সার্টিফিকেট করবেন? টিন সার্টিফিকেট তৈরী

আপনি যদি মনে করেন আপনার  বাৎসরিক ইনকাম ৩-৪ লক্ষ টাকা হয় তাহলে আপনি টিন সার্টিফিকেট নিতে পারেন আপনার জন্য TIN নেওয়ার জন্য http://secure.incometax.gov.bd/TINHome    ওয়েব সাইটিতে প্রবেশ করতে হবে এবং রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে আপনার ফোন নম্বর দিয়ে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার একাউন্ট করে নিবেন। এরপর এমন একটি লেখা দেখতে পাবেন  For TIN registration/re-registration, click here বাটনে ক্লিক করুন। করদাতার ধরন অংশে আপনি ব্যক্তি/ প্রবাসী বা কোম্পানি- যা আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তা নির্বাচন করুন।  এছাড়া আপনি যদি এর আগে টিআইএন  (TIN) সার্টিফিকেট করে থাকেন তাহলে Re-registration বাটনে ক্লিক করবেন এবং আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে  new-registration বাটনে ক্লিক করবেন। এরপর আপনার পেশা, আয়ের উৎস, স্থান দিয়ে পরবর্তী পাতায় যেতে হবে।

এরপর আপনার ব্যক্তিগত সব তথ্য যেমনঃ নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর (যদি থাকে) ইত্যাদি প্রযোজ্য বিষয় গুলো সঠিক ভাবে দিয়ে কনফার্ম করুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার ই- টিন প্রস্তুত হয়ে যাবে। চাইলে সাথে সাথে আপনার TIN সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে পারবেন।

টিন সার্টিফিকেট থাকলেই কি কর দিতে হবে?

  1. কোন ব্যক্তি-করদাতার আয় বছরে ৩,০০,০০০ টাকার বেশি হয় তাহলে আপনাকে আয় কর দিতে হবে।
  2. মহিলা ৬৫ বছর বা তদুর্ধ্ব  বয়সের করদাতার আয় যদি বছরে ৩,৫০,০০০ টাকার বেশি হয় তাহলে আপনাকে আয়কর দিতে হবে।

আপনি যদি টিন সার্টিফিকেট গ্রহন করে থাকেন  আপনার করযোগ্য আয় থাকুক বা না থাকুক তাহলে আপনাকে অব্যশই রিটার্ন সাবমিট করতে হবে। আপনার জন্য রিটার্ন সাবমিট করা বাধ্যতামূলক। তবে  ৩ শ্রেনীর মানুষের জন্য রির্টান সাবমিট করা বাধ্যতামূলক নয় তা নিম্নরূপেঃ

  • বাংলাদেশে ফিক্সড বেজ নেই এমন অনিবাসীকে।
  • জমি বিক্রয়ের জন্য ১২ ডিজিটের TIN গ্রহন করেছেন কিন্তু করযোগ্য আয় নেই।
  • ক্রেডিট কার্ড গ্রহনের জন্য ১২ ডিজিটের TIN গ্রহন করেছেন কিন্তু করযোগ্য আয় নেই।

উপরোল্লিখিত ৩ শ্রেনীর ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে রিটার্ন সাবমিট করা বাধ্যতামূল আপনি যদি টিন সার্টিফিকেট করে থাকেন।

[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]আরো পড়ুন[/box]

কতটাকা ইনকাম করলে কত % আয়কর দিতে হবে?

যারা টিন গ্রহন করেছেন তাদেরকে রিটার্ন  সাবমিট বাধ্যতামূলক করযোগ্য আয় থাকুক বা না থাকুক ৩ শ্রেনীর লোক ব্যতীত। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা  কত টাকা  ইনকা করলে কতটাকা আয়কর দিতে হয়। তাই নিম্নেরূপে আয়করের ২০২০-২০২১ তালিকা পড়ুন এবং এবং আপনার আয়করের পরিমান জানুন।

পুরুষ নারী/ ৬৫ বছর বয়স্ক কর হার
০ – ৩ লক্ষ টাকা ০- সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ০%
৩ – ৪ লক্ষ টাকা ৩.৫ – ৪.৫ লক্ষ টাকা ৫%
৪-৭ লক্ষ টাকা ৪.৫-৪.৭ লক্ষ টাকা ১০%
৭-১১ লক্ষ টাকা ৭.৫ – ১১.৫ লক্ষ টাকা ১৫%
১১-১৬ লক্ষ টাকা ১১.৫ -১৬.৫ লক্ষ টাকা ২০%

আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে কি হয়?

যাদেরকে আবশ্যিকভাবে  রিটার্ন দাখিল করতে হবে

  • যিনি ১২ ডিজিটের TIN গ্রহন করেছেন।
  • করদাতার মোট আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করলে।
  • আয় বছরের পূর্ববর্তী ৩ বছরের যেকোন বছর করদাতার কর নির্ধারন হয়ে থাকে বা তার করযোগ্য আয় হয়ে থাকে।
  • করদাতা যদি কোন কোঃ শেয়ার হোল্ডার পরিচালক বা শেয়ার হোল্ডার Employee হন।
  • করদাতা যদি কোন ফার্মের অংশীদার হন।

রিটার্ন ফরম কোথায় পাওয়া যায়

সকল আয়কর অফিসে রিটার্ন ফরম পাওয়া যায়। একজন করদাতা সারাবছর আয়কর অফিস থেকে বিনামূল্যে রিটার্ন ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের  ওয়েব সাইট nbr.govt.bd থেকে রিটার্ন ফরম ডাউনলোড করা যাবে। রিটার্নের ফটোকপিও ও গ্রহনযোগ্য।

করদাতাকে কখন রিটার্ন দাখিল করতে হয়

ব্যক্তি করদাতাকে TAX-DAY (কর দিবস) এর মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। ২০২০-২০২১ কর বছরের জন্য ৩০ নভেম্বর ২০২০ তারিখ হচ্ছে কর দিবস। অর্থাৎ রিটার্ন দাখিলের সবশেষ তারিখ। একজন ব্যক্তি-করদাতা ১ জুলাই ২০২০ থেকে ৩০ নভেম্বর ২০২০ তারিখের মধ্যে ২০২০ -২০২১ কর বছরের জন্য রিটার্ন দাখিল করবেন।

আয়কর প্রদান, রিটার্ন দাখিল ও আয়কর আইন সংক্রান্ত কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কোন আয়কর আইনজীবীর সরাপন্ন হোন। অথবা Helpline: 09611-777111 or 333 নম্বরে যোগাযোগ করুন।

0Shares

Leave a Comment